প্রত্যয় ডেস্ক: টানা ভারি বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে বাড়ছেই বিভিন্ন নদ-নদীর পানি। চতুর্থ দফা বন্যা উত্তরবঙ্গের মানুষকে এখনো ভোগাচ্ছে। যমুনার পানি সিরাজগঞ্জ হার্ড পয়েন্টে বিপৎসীমার ১৩ সেন্টিমিটার এবং কাজিপুর পয়েন্টে ২১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফরিদপুরে পদ্মার পানি বিপৎসীমার ২২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে ঘাঘট নদীর পানি বিপৎসীমার ২০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে বইছে। এরই মধ্যে অনেক এলাকার ফসলের মাঠ ডুবে গেছে। ভেসে গেছে পুকুর ও ঘেরের মাছ। জেলাভিত্তিক খবর-
ফরিদপুর : ফরিদপুর অঞ্চলের নদ-নদীর পানি এক সপ্তাহ ধরে বাড়ছে প্রতিদিন। গতকাল পদ্মার পানি বিপৎসীমার ২২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। এর ফলে নতুন করে প্লাবিত হচ্ছে নিম্নাঞ্চল। জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সুলতান মাহমুদ জানান, প্রতিদিন পদ্মা, মধুমতী ও আড়িয়াল খাঁ নদে পানি বাড়ছে।
নওগাঁ : নওগাঁর বন্যা পরিস্থিতির সার্বিক উন্নতি হয়েছে। আত্রাই ও যমুনা নদীর পানি অনেকটাই কমেছে। একটি পয়েন্ট ছাড়া সব কটি পয়েন্টে বিপত্সীমার নিচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরিফ উজ জামান খান জানান, গতকাল সকাল ৯টায় আত্রাই নদীর পানি মহাদেবপুর পয়েন্টে বিপৎসীমার ২৫০ সেন্টিমিটার, ধামইরহাটের শিমুলতলী পয়েন্টে বিপত্সীমার ২২৬ সেন্টিমিটার, মান্দার জোতবাজার পয়েন্টে বিপৎসীমার ৩৮ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এই নদীর আহসানগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশন পয়েন্টে এখনো বিপৎসীমার ৩২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এদিকে নওগাঁয় ছোট যমুনা নদীর পানি গত ২৪ ঘণ্টায় ১৫ সেন্টিমিটার কমে গিয়ে বর্তমানে বিপৎসীমার সমান্তরালে রয়েছে।
সিরাজগঞ্জ : যমুনা, ফুলজোড়, ইছামতী, হুরাসাগর, করতোয়াসহ জেলার অভ্যন্তরীণ সব নদ-নদীর পানি বেড়েই চলেছে। পানি বাড়ার কারণে তলিয়ে যাচ্ছে একের পর এক নিম্নাঞ্চল। সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) উপবিভাগীয় প্রকৌশলী এ কে এম রফিকুল ইসলাম বলেন, গতকাল বিকেলে যমুনার পানি সিরাজগঞ্জ হার্ড পয়েন্টে বিপত্সীমার ১৩ সেন্টিমিটার এবং কাজিপুর পয়েন্টে ২১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এদিকে যমুনায় পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তলিয়ে যাচ্ছে ফসল। এর আগে বন্যায় জেলায় সোয়া ২০০ কোটি টাকার ফসলের ক্ষতি হয়।
সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা) : সুন্দরগঞ্জে ঘাঘট নদীর পানি এখনো বাড়ছে। এক সপ্তাহের টানা ভারি বর্ষণ আর উজানের ঢলে ঘাঘট নদীর পানি বিপৎসীমার ২০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে বন্যার কবলে পড়েছে দুটি ইউনিয়নের ছয়টি ওয়ার্ড। বানের পানি নদীর তীর পেরিয়ে বিভিন্ন খাল-বিল দিয়ে লোকালয়ে ঢুকে পড়ায় দুই ইউনিয়নের ৪০ হাজার মানুষ এখনো পানিবন্দি রয়েছে। ভেসে গেছে সহস্রাধিক পুকুর ও খামারের কোটি টাকার মাছ।
রংপুর : শত বছরের রেকর্ড ভেঙে রংপুরে এক রাতের বৃষ্টিতে সর্বনাশ হয়েছে মাছ চাষিদের। মাছ চাষের অন্যতম এলাকা নগরীর নাছনিয়া, কুকরুল, চিকলী, চকচকার বিল, বোতলা বিলসহ ৩৩টি ওয়ার্ডের কয়েক হাজার পুকুর ও খালের মাছ পানিতে ভেসে গেছে।
জামালপুর : বাহাদুরাবাদ পয়েন্টে যমুনা নদীর পানি গত ২৪ ঘণ্টায় ১৬ সেন্টিমিটার কমে গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় বিপৎসীমার ৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। এ ছাড়া ব্রহ্মপুত্রসহ জেলার অভ্যন্তরীণ অন্য নদ-নদীর পানি বিপত্সীমার অনেক নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।